নতুনধরা অ্যাসেটস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাদী-উজ-জামান বলছেন তাঁদের ভিন্নধর্মী সব পরিকল্পনার কথা।
‘নতুন ধরা নতুন প্রজন্মেও নতুন পৃথিবী’ এই স্লোগানে এগিয়ে যাচ্ছি। তিন ফসলের জমিতে আমরা আবাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের আবাসন ঢাকার অদূরে। ঢাকার উপর জনগণের যে চাপ বাড়ছে, এতে বাসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। ঢাকার অদূরে পরিকল্পিত আবাসন না করলে নগরকে চাপমুক্ত রাখা সম্ভব হবে না। আমরা শতভাগ পরিবেশবান্ধব আবাসন প্রকল্পে বদ্ধপরিকর।
ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের সঙ্গে আমাদের ‘নতুনধরা’ প্রকল্প। চার লেনবিশিষ্ট রাস্তা। কাজও দ্রুত হচ্ছে। যাবতীয় নাগরিক সুবিধা আমাদের প্রকল্পে থাকবে। আমেরিকান প্রতিষ্ঠান মার্জ ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশনে সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। বাংলাদেশেও বিশ্বমানের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকার অদূরে এই অংশটুকু সুবিধাবঞ্চিত ছিল। সেখানে উন্নয়নের অবিশ্বাস্য কর্মযজ্ঞ চলছে। সবচেয়ে বড় উদাহরণ পদ্মা সেতু। সরকারের এমন উদ্যোগের পাশে নতুনধরা নতুন মাত্রা যোগ করবে।
উদ্যোগ তো নিতে পারি
রিয়েল এস্টেটস সেক্টরে আমাদের মূল লক্ষ্য আস্থা ফেরানো। মিথ্যা ও প্রতারণা থেকে আস্থা ফেরাতে আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশে প্রথম নতুনধরা ‘টেনশন এক্সচেঞ্জ অফার’ চালু করেছে। আগে গ্রাহকরা শতভাগ টাকা পরিশোধ করেও জমির রেজিস্ট্রেশন পেতেন না। প্লট তো পরের কথা। পুরো অর্থ পরিশোধ করেও নানা জায়গায় গ্রাহকরা ধরনা দিতেন, অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতেন। কিছু কম্পানির প্রতারণামূলক মানসিকতায় গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। এককভাবে আমরা গ্রাহকের আস্তা ফেরাতে পারব না; কিন্তু উদ্যোগ তো নিতে পারি। সেই উদ্যোগের মধ্যে কিস্তির ৭০ শতাংশ অর্থ পরিশোধে আমরা প্লট প্রস্তুত করার অঙ্গীকার করেছি। গ্রাহক প্লট পুরোপুরি বুঝে পাওয়ার সময় বাকি ৩০ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করবেন। এতে টেনশনটা গ্রাহকের পরিবর্তে কম্পানির কাছে চলে এলো। জমি পুরোপুরি প্রস্তুত করে বাকি ৩০ শতাংশ টাকার জন্য আমরাই গ্রাহকদের পেছনে ঘুরব। আমাদের এই থিমে টেনশনটা এখন গ্রাহকের নয়; বরং ডেভেলপারের। বিশ্বাস অর্জনে আমরা শুধু সিস্টেমে পরিবর্তন এনেছি।
প্রিমিয়াম প্লট
নতুনধরা প্রথম প্রিমিয়াম প্লট ধারণা চালু করেছে। কর্নার প্লটে দুদিকে রাস্তা থাকে। আমাদের প্রতিটি প্লটের সামনে ২৫-৩০ ফুট রাস্তা। পাশে ও পেছনে ৯ ফুট রাস্তা। এর মানে তিন দিকে খোলা, যা কর্নার প্লটের চেয়েও বেশি। পাশাপাশি দুটি প্লটে চার দিকেই রাস্তা। জমির মালিকদের আর বেশি জায়গা ছেড়ে ভবন নির্মাণ করতে হবে না।
আমাদের আরেকটি উদ্যোগ গ্রাহকের মৃত্যুতে কিস্তির ঝুঁকি বহন করবে কম্পানি। এ ক্ষেত্রে কোনো গ্রাহক ২০ লাখ টাকা মূল্যের প্লটে জীবদ্দশায় দুই লাখ টাকা দিলেও পুরো প্লটটা সময়মতো গ্রাহকের পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বাংলাদেশে রিয়েল এস্টেট সেক্টরে বীমার মতো ঝুঁকি বহনের কনসেপ্ট আমরা প্রথম চালু করেছি।
যেভাবে ভাবনা এলো
প্রায় ১৫ বছর আগের কথা। মি. হক নামের একজন গ্রাহক পেনশনের টাকায় প্লট কিনেছিলেন। মূল্য পরিশোধের পর কয়েক বছর দেরিতে কম্পানি জমি রেজিস্ট্রেশন দেয়। কিন্তু এতটা সময় তিনি দুশ্চিন্তায় ছিলেন। বুকিং বাতিল করতে চেয়েছিলেন, তবে এতেও ১০ শতাংশ কর্তন হবে। রেজিস্ট্রেশনের পর আরো ১০ বছর লেগেছে জমি বুঝে পেতে। এমন দুঃখের কাহিনি আরো অনেকের আছে। সে জন্য ৭০ শতাংশ পেমেন্টের মধ্যেই আমরা প্লটটা রেডি করার নিশ্চয়তা দিচ্ছি।
চ্যালেঞ্জ যেমন
শুরুতে লোকে বিশ্বাস করতে চাইছিল না। আমাদের কৌশল ও কনসেপ্ট—স্বচ্ছতার মাধ্যমে আমরা প্রমাণের চেষ্টা করেছি। ২৯৯টি প্লটের ফ্রি রেজিস্ট্রেশন দিয়েছিলাম। গ্রাহকরা দেখেছেন আসলেই আমাদের প্লটগুলো আছে। এভাবেই মানুষের ভেতর আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করেছি। একজন গ্রাহক যেমন ১০ বার প্রতারিত হয়েও বুকিং দিয়েছেন। ১১ বারে গিয়ে আমাদের বিশ্বাস করেছেন। এটা অনেক আশাব্যঞ্জক। মানুষ কিন্তু বিশ্বাস থেকে সরে যায়নি, বিশ্বাস থেকে সরানোর জন্য আমরাই দায়ী।
প্রকৃতি ও আধুনিকতার সমন্বয়
আমাদের মূল থিম সবুজ আবাসন। সরকারি নীতি অনুযায়ী নাগরিক সুবিধার জন্য ৩৮-৪০ শতাংশ জায়গা থাকবে। প্লটের পাশে ৯ ফুট খোলা জায়গায় সবুজায়নের পরিকল্পনা। ভেতরে বিস্তৃত লেকের চারপাশেও বনায়ন হবে। প্রতিটি সড়কে দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে গাছপালা থাকবে।
নতুন দিনের আবাসন ব্যবস্থা
২০১৩ সালে মার্স ইনস্টিটিউট অব রিয়েল এস্টেট ট্রেইনিং (মিরেট) প্রতিষ্ঠা করি। আমি প্রতিষ্ঠাতা সিইও। রিয়েল এস্টেট সেক্টর শুধু প্লট আর ফ্ল্যাটে শেষ না। অনেক কিছু শেখার আছে। আজকাল সেক্টরটিতে ধসের অন্যতম কারণ অনেকে বিজনেস সম্পর্কে কিছুই জানেন না। উদ্যোক্তারা শতভাগ পরনির্ভরশীল। তাই রিয়েল এস্টেট সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে আগ্রহীরা মিরেটে কোর্স করতে পারছেন। স্বনামধন্য রিয়েল এস্টেট কম্পানির ডিপার্টমেন্ট হেডদের থেকে ব্যাবহারিক জ্ঞানগুলো জানতে পারছেন। অনেক গ্রাহকরাও কোর্স করেছেন। প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার আগেও গ্রাহকদের অনেক বিষয়ে জানতে হয়। অনেকে জানেন না ডেভেলপারের কাছ থেকে কী কী জানতে হবে।
নতুন পরিকল্পনা
ঘন ঘন ল্যান্ড প্রজেক্ট করব না। অবাক হয়ে যাই, যখন অনেক কম্পানি ৮-১০টা ল্যান্ড প্রজেক্ট করে। বড় কম্পানির ক্ষেত্রে আলাদা বিষয়। যেমন বসুন্ধরা গ্রুপ ল্যান্ড প্রজেক্টে সফল। আমরা যারা সাধারণভাবে ব্যবসা করছি, একটা প্রকল্প দাঁড় করানো অনেক পরিশ্রমের কাজ। অঙ্গীকার রক্ষা করা খুব কঠিন।
গ্রাহকদের জন্য পরামর্শ
কম্পানির কাগজপত্র এবং জমি কেনার প্রক্রিয়া যাচাই করবেন। তারা আসলেই জমি কিনে নাকি সাইনবোর্ড সাইনবোর্ড সর্বস্ব ব্যবসা করছে নিশ্চিত হবেন। তথ্য জানার অধিকার আপনার রয়েছে। জেনেবুঝে প্লট বুকিং দিবেন। আর বুকিং দেয়ার সময় কি কি প্রশ্ন করবেন সেটাও জেনে নিবেন।
লেখা ও ছবি : সানজাদুল ইসলাম সাফা
প্রবাসী টিভির ইউটিউব চ্যানেলে যোগ দিতে এখানে ক্লিক করুন।
বিনোদন বিভাগের সুপারহিট:
- কাকে বিয়ে করছেন অভিনেত্রী কাজল আগরওয়াল?
- নতুন ভূমিকায় ভূমিছবিতে বাঙালি অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত
- বাবার বিয়েতে কী পরবেন? মায়ের কাছে জানতে চেয়েছিলেন !
- পর্ন ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের রোজাগার, জানালেন মিয়া খলিফা
- বিয়ের ভাবনা এবং ছেলের বলিউডে অভিনয়! যা বললেন মালাইকা আরোরা
- খোলা পোশাকে আমির কন্যা ইরা খান
- বিপাকে স্বরা ভাস্কর
- পরিচালক রনির ছবিতে সানি লিওন
- ১২ বছরের ছোট অর্জুন কাপুর