ডি কে মহন্ত: দেশে বোরোর ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু কৃষকদের মুখে হাসি নেই। কৃষিকাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকা এ দেশের কৃষক অনেকটাই হতাশ। কৃষিপণ্যের দাম এবং কৃষকের মজুরি সব মিলিয়ে ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না কৃষক। উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরের ভাল ফলন আশানুরূপ হয়েছে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র অনুযায়ী, উপজেলার ০৯/৩০০ হেক্টর চাষের সংখ্যা ও জমির পরিমাণে সেচের আওতাভুক্ত মোট ফসলি জমি ২৬০১৬ হেক্টরের ১৮২৫০ হেক্টর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রায় অর্জন হয়েছে ১৮২৮০ হেক্টর। উপজেলার, ১ নং জয়পুর ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খাদেমুল ইসলাম জানান, পরামর্শ গ্রহণকারী সব কৃষকের বোরোর ফলন ভাল হয়েছে। পরামর্শ গ্রহণকারী কৃষক মোঃ আবুবকরও আউস ধান চাষে ভাল ফলন হয়েছে বলে জানান। এদিকে কৃষক মোঃ ফরহাদ মমিন, গণেশ চন্দ্র, মোঃ শাহাজান আলী কৃষি পরামর্শ নিয়ে ভাল ফলন হয়েছে বলে জানান।
উপজেলার মাঠ পর্যায়ে কৃষি পরামর্শকারী উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা (বিনোদ নগড় ইউনিয়নের তাপস চন্দ্র সরকার, মোঃ সাব্বির তালুকদার ও গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের মোঃ মোক্তাবির হোসেন, মোঃ সাহিন আহমেদ) জানান সেবা ও পরামর্শ গ্রহণকারী সব কৃষকের এবারের বোরোধানের ফলন খুব ভাল হয়েছে। কিন্তু ১ নং জয়পুর ও ৯ নং কুশদহ ইউনিয়নের অনেক কৃষকের বোরো ক্ষেতে হঠাৎ মাঝরা পোকার প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা যায়। অজ্ঞাত কারণে ক্ষেতে মাঝরা পোকায় আক্রান্ত কৃষরা অভিযোগ করছেন যে, এতো সার কীটনাশক ব্যবহার, সময়মত আকাশের বৃষ্টি ও সেচ দেওয়ার পরও মাঝরা পোকা থেকে রেহাই পাওয়া গেল না।
জয়পুর পল্লীর শিকারপুর গ্রামের কৃষক কমল চন্দ্র দাস বলেন, ধানের দাম নেই আবার মাঝরা পোকার আক্রমণ। এভাবে চলতে থাকলে কৃষকরা একসময় যেকোনো ধরনের ফসল ফলাতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। কারণ হিসাবে তিনি উল্লেখ করেন, অনতিবিলম্বে সরকারের উচিত চাষে ব্যবহৃত কৃষি উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং ফসলের সঠিক বাজার মূল্য নির্ধারণ করা।
মাঝরা পোকার আক্রমণ সম্পর্কে কৃষি কর্মকর্তা আবুরেজা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ফণী’র আগমুহূর্তে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে নবাবগঞ্জ এলাকাজুড়ে এবারের বোরো ক্ষেতে মাঝরা পোকা দেখা যায়। যেসব কৃষকরা পরামর্শ গ্রহণ করেছেন তাদের জমিতে মাঝরা পোকা আসেনি। কৃষি অফিসের পরামর্শের বাহিরে বাজারের দোকানদার, সার ও কীটনাশক কম্পানির এজেন্ট এবং ডিলারের পরামর্শে অতিরিক্ত সার, সাইফারমার্থ্রিন এবং ল্যামডাসাইহ্যালোথ্রিন গ্রুপের ঔষধ জমিতে অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগ করেছেন, তারা মাঝরা পোকায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেজন্য কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক সময়ে কৃষি পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।