শ্যামনগরে বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

রনজিৎ বর্মন, শ্যামনগর: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার প্রধান ফসল আমন ধান উঠানোর পরই তারা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বোরো ধান চাষে।

উপজেলা চিংড়ি চাষ এলাকা নামে খ্যাত থাকলেও দিনে দিনে কৃষকরা ধান, সবজি সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ছেন। লবন পানির চিংড়ি ঘেরে আশানুরূপ মৎস্য উৎপাদন করতে না পারায় বা লাভবান না হওয়ায় চিংড়ি চাষীরাও ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন যা চাষীরা মতামত প্রকাশ করেন।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এবার উপজেলার বারটি ইউনিয়নে বোরো চাষের লক্ষ্য মাত্রা ২ হাজার হেক্টর। বোরো চাষে কৃষকদের আগ্রহ দেখে উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন যে এবার লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। মুন্সীগঞ্জ ইউপির ধানখালী গ্রামের বোরো চাষি সুপদ বৈদ্য, জেলেখালী গ্রামের নিরঞ্জন মন্ডল বলেন আমন ফসল ভাল পেয়েছি সে আশায় বোরো ধান চাষের এরিয়া বাড়িয়েছি।

আবাদচন্ডিপুর গ্রামের বোরো চাষি মিজানুর রহমান সহ অন্যান্য এলাকার চাষিরা বলেন, পানির সংকট শুস্ক মেীসুমে থাকলেও বৃষ্টি নির্ভর হয়ে কিছুটা চাষ করেছি। দেখা যায় আটুলিয়া ও অন্যান্য ইউপিতে বোরো চাষীরা নিজেদের ব্যবহৃত পানির জন্য পুকুরের উপর নির্ভর হয়ে বোরো চাষ শুরু করেছেন। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী উপজেলায় ভূরুলিয়া ইউপিতে ১৪৫ হেক্টর, কাশিমাড়ী- ২৮৫ হেঃ, শ্যামনগর -১৩৭ হেঃ, নুরনগর-১৩৫ হেঃ, কৈখালী- ৪৫৭ হেঃ, রমজাননগর-১৪০ হেঃ, মুন্সিগঞ্জ- ২৯ হেঃ, ঈশ্বরীপুর-১১১ হেঃ, বুড়িগোয়ালিনী- ২০০ হেঃ, আটুলিয়া-৪০হেঃ, পদ্মপুকুর-২১০ হেঃ ও গাবুরা-৪০ হেঃ বোরো ধান চাষ গত মৌসুমে হয়েছিল।

উপজেলা কৃষি অফিসার আবুল হোসেন মিয়া বলেন, ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত উপজেলায় ৯ শত হেক্টর বোরো আবাদ হয়েছে। তিনি বলেন কৃষকরা ব্রি-২৮ ধানের জাত বেশি চাষ করে থাকেন। এলাকায় ডিপটিউবওয়েলে ভাল পানি পাওয়া যায়না। ফলে বৃষ্টি নির্ভর বোরো ধান চাষ বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকদের ব্রি-৬৭ ধান উৎপাদনের ব্যাপারে পরামর্শ দিচ্ছেন। উপজেলায় সকল ইউনিয়নে কমবেশি লবন পানিতে চিংড়ী চাষ হয়ে থাকে। চিংড়ি চাষে লাভবান না হওয়ায় অনেক চাষীরা ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। শ্যামনগর বিভিন্ন ইউপিতে শতাধিক খাল রয়েছে এ সকল খাল গুলিতে মিষ্টি পানির প্রবাহ সৃষ্টি করা হলে শুস্ক মেীসুমে বোরো ধান চাষ সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে পানি সংকট কেটে যাবে বলে অভিজ্ঞরা মত প্রকাশ করেন।