সারা দেশে বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতী’র পূজা অনুষ্ঠিত

বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী সরস্বতী| রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) উৎসব মুখর পরিবেশে সারাদেশে পালিত হয়েছে সরস্বতী পূজা| সারা দেশের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে পড়ুন ডেস্ক রিপোর্ট|

মাগুরা: মাগুরায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রবিবার বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে । সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে দেবী সরস্বতী বিদ্যা বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। মাগুরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুন্ডু জানান, হিন্দু শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও মাগুরার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মহাসাড়ম্বরে সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হয়েছে। মাগুরা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, আর্দশ কলেজসহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খন্ড কালীন মন্ডপ নির্মান করা হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, বাসাবাড়ি ও পূজামন্ডপে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়।

দিনাজপুর: সরস্বতী হিন্দু ধর্মালম্বীদের বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী। সরস্বতীর আরাধনাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠেয় একটি অন্যতম প্রধান হিন্দু উৎসব। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা আয়োজিত হয়। তিথিটি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। উত্তর ভারত,পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, নেপাল ও বাংলাদেশে সরস্বতী পূজা উপলক্ষে বিশেষ উৎসাহ উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হয়। শ্রীপঞ্চমীর দিন অতি প্রত্যুষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ছাত্রছাত্রীদের গৃহ ও সর্বজনীন পূজামণ্ডপে দেবী সরস্বতীর পূজা করা হয়। ধর্মপ্রাণ হিন্দু পরিবারে এই দিনটি শিশুদের হাতেখড়ি, ব্রাহ্মণভোজন ও পিতৃতর্পণ প্রথাও প্রচলিত। পূজার দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সর্বজনীন পূজামণ্ডপগুলিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও আয়োজিত হয়ে থাকে। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে, শ্রীপঞ্চমীর দিন সকালেই সরস্বতী পূজা সম্পন্ন করা যায়। সরস্বতীর পূজা সাধারণ পূজার নিয়মানুসারেই হয়। তবে এই পূজায় কয়েকটি বিশেষ উপাচার বা সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। যথা: অভ্র-আবীর, আমের মুকুল, দোয়াত-কলম ও যবের শিষ। পূজার জন্য বাসন্তী রঙের গাঁদা ফুলও প্রয়োজন হয়। লোকাঁচার অনুসারে, ছাত্রছাত্রীরা পূজার পূর্বে কুল ভক্ষণ করেন না, পূজার দিন কিছু লেখাও নিষিদ্ধ| যথাবিহিত পূজার পর লক্ষ্মী, নারায়ণ, লেখনী-মস্যাধার (দোয়াত-কলম), পুস্তক ও বাদ্যযন্ত্রেরও পূজা করার প্রথা প্রচলিত আছে। এই দিন ছোটোদের হাতেখড়ি দিয়ে পাঠ্যজীবন শুরু হয়। পূজান্তে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার প্রথাটি অত্যন্ত জনপ্রিয়, তাই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের দল বেঁধে অঞ্জলি দিতে দেখা যায়। তারই ধারাবাহিকতায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বেলঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজনে ১০ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে সরস্বতীপূজা ২০১৯ ইং- অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত পুজা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি ভবানী চন্দ্র প্রামাণিক, প্রধান শিক্ষক মোঃ এরসাদুল হক, সহকারী প্রধান পিযুষ কুমার সরকার, কাব্যতীর্থ শিক্ষক দীপক সরকার রমেন, গ্রন্থাগারিক গোপাল চন্দ্র দাসসহ অন্যান্য শিক্ষক মন্ডলীগণ, ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্য, আমন্ত্রিত প্রবাসী টিভি’র স্থানীয় প্রতিনিধি দিপক কুমার মহন্ত ও প্রতিষ্ঠানের প্রায় সকল ছাত্রছাত্রীবৃন্দ। সকাল ১০:৩০ মিনিটে অঞ্জলির মধ্যদিয়ে পূজা শেষ হয় এবং উপস্থিত সকলের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করে আয়োজক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বেলঘাট উচ্চ বিদ্যালয়।

নাটোর: নাটোরে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পুজা। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমীর অমিয় লগ্নে দেবীকে বরণ করে নিয়ে স্বআসনে প্রতিষ্ঠা করা হয় দেবী সরস্বতীকে। রবিবার সকাল থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে পূজা মন্ডপগুলো। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি পূজায় অংশ গ্রহন করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের মনের সকল তমশা দূর করে বিদ্যা দানের জন্য দেবীর কাছে অঞ্জলী প্রদান করেন। শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতি বছরেই তাদের বিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা হয়। তারা মায়ের কাছে অঞ্জলী দিয়ে প্রার্থনা করে, তারা যেন সারা বছর মন দিয়ে লেখাপড়া করে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করতে পারেন। পূজা উপলক্ষে মন্ডপে মন্ডপে নেওয়া হয় ভক্তিমুলক গান, প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যা আরতি সহ নানা আনুষ্ঠানিকতা। এছাড়াও পাড়ায় পাড়ায়, বাড়িতে বাড়িতেও অনুষ্ঠিত হয় সরস্বতী পূজা।

হাবিপ্রবি: সনাতন বিদ্যার্থী সংসদের আয়োজনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবারের ন্যায় এবারও হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি’তে) সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় পূজা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কর্মসূচির মধ্যে পূজারম্ভ, অঞ্জলি প্রদান, মহাপ্রসাদ বিতরণ, ধর্মসভা ও আলোচনা সভা ছিল অন্যতম। সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-ছাত্র কেন্দ্রে পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা ১২টায় আলোচনা সভা শেষে মহাপ্রসাদ বিতরণ শুরু হয়। পূজা উদযাপন কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধাক্ষ্য প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, জনসংযোগ ও প্রকশনা শাখার পরিচালক প্রফেসর ড. শ্রীপতি সিকদার ,কৃষি রসায়ন বিভাগের প্রফেসর ড. বিকাশ চন্দ্র সরকার, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রফেসর ড. সাইফুল হুদা ও পূজা উৎযাপন কমিটির সদস্য-সচিব শক্তি চন্দ্র মন্ডল ।