রনজিৎ বর্মন (শ্যামনগর) সাতক্ষীরা: লবনাক্ততার প্রভাব, পানি সংকট, রোগ বালাই কম হওয়া, ফলনে ভালো হওয়া এ সব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জাওয়াখালী গ্রামে মৃত জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী হাসিনা খাতুন বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন।
সরেজমিনে দেখা যায় বাড়ীর উঠানে রাখা ১৫টি বস্তায় পেয়াজ, রসুন, কাঁচা মরিচ, লাল শাক, ফুল কপি, মূলা সহ অন্যান্য সবজি চাষ করেছেন। জানা যায়, এ সকল সবজি চাষের পূর্বেও অন্যান্য সবজি চাষ করেছেন এবং একের পর এক সবজি চাষ করছেন। হাসিনা খাতুন বস্তা পদ্ধতির সবজি চাষ বিষয়ে বলেন, এ পদ্ধতিতে সুবিধা হল ফসলে রোগ বালাই কম হয়, লবনাক্ততার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়, ফলনে বেশি পাওয়া যায় এবং জায়গাও কম লাগে। তিনি আরও বলেন, ভার্মি কম্পোস্ট ব্যবহার করে ফলনে সবজি বেশি পেয়েছেন। বস্তা প্রতি হাসিনা বেগমের খরচের বিষয়ে জানান ৭০ থেকে ৮০ টাকা মাত্র। একটি বস্তার মধ্যে যে সকল উপকরণ ব্যবহার করেন সে গুলি হল ৭ ঝুড়ি মাটি, ভার্মি কম্পোষ্ট ৩ কেজি, গোবর, মুরগির বিষ্টা ও পানি। জানা গেছে, বস্তায় ২/৩ দিন অন্তর পানি দিতে হয় ২ লিটার পরিমানে।
হাসিনা বেগমের বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষে আগ্রহ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা সদরে নকশীকাঁথা মহিলা সংগঠনের এক জন গ্রুপ সদস্য হিসেবে ভিএসও বাংলাদেশের অপসন প্রকল্পের আওতায় বিগ লটারী ফান্ডের অর্থায়নে বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ পান এবং তার পরেই চাষ শুরু করেন। হাসিনা বেগম বলেন, স্বামী দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার কারণে বাবার ভিটায় থাকেন, তার ১টা ছেলে আছে। নিজের সন্তানকে লেখা পড়ার খরচ চালানো সহ নিজের খরচ চালাতে এ সকল সবজি চাষ এবং দর্জি কাজ করে থাকেন।
হাসিনা বেগম বলেন, তার দেখাদেখি এলাকায় কয়েকজন চাষী আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং এ পদ্ধতিতে শুরু করেছেন। জাওয়াখালি গ্রামের দেবাশিষ মালো ২০ টি বস্তায় ফুলকপি, লাউ, এলাভেরা, টমোটো সহ অন্যান্য সবজি চাষ করেছেন। চাষের সুবিধা বলেন, লবনাক্ততার থেকে রক্ষা পেতে এ পদ্ধতি কার্যকর।
বস্তা পদ্ধতির সবজি চাষ বিষয়ে নকশীকাঁথার পরিচালক চন্দ্রিকা ব্যানার্জী বলেন, শ্যামনগর উপজেলায় সকল ইউনিয়নে কম বেশি লবন পানিতে চিংড়ী চাষ হয়ে থাকে। লবনাক্ততার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বস্তা পদ্ধতিতে সবজি চাষ ভূমিকা রাখবে বলে নির্ধারিত কৃষকদের নকশীকাঁথার অপসন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।