নিজস্ব প্রতিনিধি: স্বপ্নে রোকেয়া বেগম মাজার দেখেছিলেন। এতে রাতারাতি মাজার গড়েন। তবে এলাকাবাসী ভূয়া মাজার দাবি করছেন। এ মাজারটি নিয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার আশ্রাফুর ইউনিয়নের চক্রা গ্রামে।
রোকেয়া বেগম ওই গ্রামের আবদুল মমিনের দ্বিতীয় স্ত্রী। জানা গেছে, প্রায় ২ মাস আগে ওই গ্রামের মৃত টুকু মিয়ার ছেলে আবদুল মমিন খন্দকার ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম চক্রা গ্রামের বেনুচো নতুন বাড়িতে ঘরের সামনে দুইটি কবর তৈরি করে চারদিকে লালসালু ও কয়েকটি ছবি টানিয়ে দেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে জনতার মাঝে নানা রহস্য ও কৌতূহল দেখা দেয়।
বৃহস্পতিবার (১০ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেন, আহসান হাবীব, সোহেল, আবু হানিফ, রফিক, ফরহাদ হোসেনসহ একাধিক লোকজনের সাথে কথা হয়। তারা জানান, এখানে কোনো মাজার কিংবা কবর ছিল না। আবদুল মমিন খন্দকার ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম গত ২৯ নভেম্বর রাতে অতি উৎসাহী কিছু লোকের সহায়তা তার ঘরের সামনে মাটি দিয়ে দুটি নতুন কবর তৈরি করে। অথচ তারা প্রচার করছে এখানে আধ্যাত্বিকভাবে মাজার হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলছে, চক্রা গ্রামের সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিচ্ছে তারা। ওই স্বামী-স্ত্রী যাতে কোনো প্রতারণা কিংবা ফায়দা লুটতে না পারে অচিরেই তা বন্ধ করতে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন চক্রাবাসী।
আবদুল মমিনের প্রথম স্ত্রী নাছিমা বেগম জানান, এই বিষয়ে মুখ খুলতে নিষেধ রয়েছে। এটি কোনো আধ্যাত্বিক ব্যক্তির নামে মাজার কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আমার স্বামী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগমই ভালো জানেন। তবে এখানে আগে কোনো কবর ছিল না বলে তিনি জানান। তবে মাঝে-মধ্যে এখানে হালকা জিকির ওয়াজের ব্যবস্থা করা হতো। জানতে চাইলে রোকেয়া বেগম মুঠোফোনে জানান, আমার স্বামী আবদুল মমিন ও আমি ফরিদপুরের আটরশির মুরিদ (ভক্ত)। আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাজারে যাই। আমাকে স্বপ্নে দেখানোর ফলে আমি এটি করে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে কোনও ধরনের প্রতারণার উদ্দেশে এটি করি নাই। শুধু স্বপ্নে দেখানোর ফলে তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য করেছি। ‘তাদের আশ্রয়’ দিয়েছেন তারা কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো আলগা (জিন) জাতীয়। আশ্রাফপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ এলাহী সুভাস জানান, চক্রা গ্রামে আধাত্মিক মাজার উঠার বিষয়ে আমার জানা নেই।
কচুয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, চক্রা গ্রামে আধাত্মিক মাজার উঠার বিষয়ে জানা নেই। তবে এখানে কোনও প্রতারণা হয় কিনা তা খোঁজ-খবর নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।