একদম যা তা অবস্থা। একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত। অন্তত ৬ মাস ধরে সিদ্ধান্তের পাল্টাপাল্টি চলছে। সাথে নানা নাটকীয়তাও।
কার্যকরী কমিটির সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে যে দুটি পক্ষ, মেয়াদ শেষ হবার তিন সপ্তাহ আগে, ৭ ডিসেম্বর মধ্যরাতে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়। দুইপক্ষ সভা করে সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন পরিচালনার জন্য এডহক কমিটি গঠন করা হবে। তাদের কাছে দায়িত্ব ছাড়বে কার্যকরী কমিটি। পরদিন ৮ ডিসেম্বর বিশেষ সাধারণ সভায় অনুমোদন পায় এ সিদ্ধান্ত। পরদিন থেকে এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থা নেয় কার্যকরী কমিটির বিবাদমান দুই পক্ষ। সভা করে এডহক কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থায় নেয় তারা। এরই মধ্যে বাতিল করা হয় নির্বাচন কমিশন। এরপর ডাকা হয় বিশেষ সাধারণ সভা। সে সভায় বাতিল হয় ট্রাস্টি বোর্ড। একবারে হযবরল অবস্থা।
২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে আব্দুল মালেক ও মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে দুই পক্ষ সরাসরি বিরোধে জড়ায় নানা ইস্যুতে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় সংগঠনের জন্য দ্বিতীয় বাড়ি কেনার বিষয়টি। সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে চাতুরী করে বেশি দামে একটি বাড়ি কেনার অভিযোগ ওঠে। সেই থেকে কার্যকরী কমিটিতে দুটি পক্ষ। সভাপতির পক্ষে ৮ জন। আর সাধারণ সম্পাদকের সাথে ৭ জন। তাদের সাথে সাথে সমিতির সদস্যরাও দুই ভাগ।
অক্টোবরে নির্বাচনী আয়োজনকে ঘিরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হলে স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচন। সে সময় আউটস্টেটের ভোটারদের কাছে মেইলে ব্যালট পাঠানোর ইস্যুকে ঘরে ট্রাস্টি বোর্ড, নির্বাচন কমিশন ও কার্যকরী কমিটির সভাপতির পক্ষ একদিকে আর সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ অন্যদিকে অবস্থান নেয়। সদস্যরাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। এরপর নানা রকমের সমঝোতা আয়োজনের মধ্যে গত ডিসেম্বরে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা মিলেমিশে কাজ করার অঙ্গিকার করেন। সমঝোতা হয় তাদের।
এ সমঝোতার পর আবার নানান নাটকীয়তা। একের পর এক বাঁক। ট্রাস্ট্রিবোর্ড বাতিল, আর কমিটির মেয়াদ ছয়মাস বাড়ানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় ২০১৯ সাল।
২০২০ সালের শুরু থেকেই সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদকের ঐক্যবদ্ধ নানা উদ্যোগ। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা। আর, অন্যদিকে, ট্রাস্টিবোর্ড বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থা সংগঠনের প্রবীণ নবীন সদস্যদের একটা অংশের। তারা ২ ফেব্রুয়ারি সভা করে মালেক সবুজের কমিটিকে অবৈধ বলে দাবি করে। এরই মধ্যে, ৮ ফেব্রুয়ারি ২৯ ডিসেম্বর ইজিএমে বাতিল হওয়া ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর ও কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেন ইজিএমে মেয়াদ বাড়ানো কার্যকরী কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক। একই দিন, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আবুল কালাম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন সবুজকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, ৭ দিনের মধ্যে সংগঠনের সব কাগজপত্র বুঝিয়ে দিতে। ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে কার্যনির্বাহী কমিটির ৯ জন সভা করেছেন। সে সভায় সভাপতি পদ থেকে আব্দুল মালেককে অব্যাহতি দিয়ে সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল আলিম জিহাদীকে সভাপতির ভার দেয়া হয়।
এভাবে এক একটা সিদ্ধান্তে সাধারণ সদস্যদের বিভ্রান্তি বাড়ছে। আগে সরাসরি বিরোধ ছিলো কার্যকরী কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে। মাঝে নিষ্পত্তির পথে গিয়ে এখন তাতে সরাসরি যোগ হয়েছে ট্রাস্টি বোর্ড। প্রবীণ সদস্যদের অনেকে উদ্বিগ্ন সংগঠনের পরিণতি নিয়ে। একই শঙ্কা নবীন সদস্যদের অনেকের। এ শঙ্কা দূর করতে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার বিকল্প নেই বলে মত তাদের।
প্রবাসী টিভির ইউটিউব চ্যানেলে যোগ দিতে এখানে ক্লিক করুন।