বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় দেশ- জহরেহ জামানি

ইরানের নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা জহরেহ জামানি। দীর্ঘদিন ধরে ঢাকাই চলচ্চিত্র উৎসবের সাথে যুক্ত। ছয়বার বাংলাদেশে এসেছেন। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের হেড অব দি প্রোগ্রামারের দায়িত্বেও ছিলেন। তাঁর গল্প বলেছেন সানজাদুল ইসলাম সাফাকে।

শৈশব থেকে সিনেমার প্রতি ভালো লাগা। বাড়িতে বড় বাগান, প্রচুর কমলা গাছ। আট বছর বয়সে কমলা গাছের সামনে অভিনয় করতে বাগানে যেতাম। ভাবতাম তারাই আমার দর্শক। এটা ছিল আমার সিনেমা যাত্রার প্রথম ধাপ।

পরবর্তীতে সিনেমা দেখতে পছন্দ করতাম। প্রতিদিন টিভিতে সিনেমা দেখতাম। ১ হাজারের বেশি সিনেমা দেখেছি। আরেকটু বড় হলে আমার শহর এঞ্জেলিনের ইয়াং সিনেমা সোসাইটির সাথে যোগাযোগ। সেখান ক্রিপ্ট রাইটারের কাজ করি। এই সোসাইটিতে সিনেমার নিয়ে পড়াশোনা করি। পরের বছর থেকেই ছবি নির্মাণ।

প্রথমে একটা স্বল্প দৈর্ঘের সিনেমা বানাই। এখন পর্যন্ত দশটির বেশি স্বল্প দৈর্ঘের ফিকশন ও ডকুমেন্টারি করেছি। সিনেমাগুলো বেশকিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারও পেয়েছে। এগুলো ইতালি, লুকার্নো, কান, ট্টাইবেকা, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ড, রাশিয়া, ইন্ডিয়ার অন্যান্য চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে।

২০১০ সালে টরেন্টোয় চলচ্চিত্র উৎসবের মুজতবা জামাল (পরিচালক ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব) সাথে জুরি ছিলাম। তারপর থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে কাজ করছি। এখানে ক্ষুদ্র ভূমিকা রাখতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। এখানে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মতো  আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক অনুষ্ঠানের আমি হেড অব প্রোগ্রামার। আমার শহরের ইয়াং সিনেমা সোসাইটিরও প্রধান।

সংস্থাটি তরুণদের সিনেমা নির্মাণের প্রশিক্ষণ দেয়। ক্যামেরা সিস্টেম, সাউন্ড সিস্টেম, এডিট সিস্টেম ও অন্যান্য সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকে। এখানে শুটিং ও এডিটংয়ের মাধ্যমে তরুণরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। এটা তরুণদের জন্য খুবই ভালো উদ্যোগ।

ঢাকায় এসে বিশ্বাস করুন, আমার নিজের বাড়ির পরিবেশের মতই লাগছে। বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় দেশ। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি, উৎসব আয়োজক ও তরুণকর্মীরা আমার পরিবারের সদস্যেদের মতো। আমরা প্রত্যেকেই অপরকে অনেক ভালোবাসি। সিনেমা হচ্ছে আমাদের মাঝে একটি সেতু। সিনেমা জাতীয় ভাষা, সবার সাথে যোগাযোগ রাখে। সিনেমায় বুঝতে কোন ভাষার প্রয়োজন নেই, এখানে সিনেমাটিক ভাষা আছে। যখন সিনেমা দেখবে, তখন অনুভব করবে। তোমারও অভিনেতা-অভিনেত্রীর সাথে কান্না আসবে। তাদের সাথে সুখী ও উত্তেজিত অনুভব করবে। তাই এটা বিশ্বের সব মানুষের জন্য কমন ব্রিজ।

গেল দু’বছর ধরে বাংলাদেশে খুব ভালো কিছু সিনেমা পেয়েছি। বিশেষ করে তরুণদের। বলিউড বা হলিউডের বাইরে বাংলাদেশি নির্মাতারা নিজেদের সংস্কৃতির গল্প তুলে ধরছে, নিজের পথেই। আমি সবখানেই বলি, বাংলাদেশে খুবই ভালো দর্শক।

প্রবাসী টিভির ইউটিউব চ্যানেলে যোগ দিতে এখানে ক্লিক করুন।

বিনোদন বিভাগের সুপারহিট: